শতশ ছড়ও পরযটক নই বনদরবন
ঈদের টানা পাঁচ দিনের ছুটিতে পর্যটক আকর্ষণের জন্য ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় চলছে জেলার সব হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসগুলোতে। কিন্তু এরপরও খালি জেলার সব হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউস। নেই আগাম কোন বুকিংও। তাই হতাশ হোটেল মালিকসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, প্রতি বছর ঈদের টানা ছুটিতে পাহাড় প্রেমীদের ভিড়ে মুখর হয়ে উঠে পর্যটন নগরী বান্দরবান। হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টগুলোও থাকে কানায় কানায় পরিপূর্ণ। আগাম বুকিং এর কারণে অনেক ক্ষেত্রে পর্যটকদের রুম দিতে হিমশিম খেতে হয় হোটেল মালিকদের। কিন্তু এ বছর সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র। ঈদের টানা পাঁচ দিনের ছুটিতেও পর্যটক শূন্য পাহাড় কন্যা বান্দরবান। হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টগুলোতে নেই কোন বুকিং। শুধু তাই নয় ৫০ শতাংশ ছাড় ঘোষণা করেও পর্যটক মিলছে না বলে জানায় হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টের মালিকরা।
হোটেল নীলাদ্রির সত্ত্বাধিকারী সুজন দাশ জানান, প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে আমাদের হোটেলের সবগুলো রুম আগে থেকে বুকিং হয়ে যেত। কিন্তু এবার আগাম কোন বুকিং নেই। ছুটি শুরু হওয়ার পরও হোটেল খালি। ৫০ শতাংশ ছাড় দেয়ার পরও কোন টুরিস্ট আসছে না।
আরও পড়ুন: ভরা মৌসুমেও সাজেকে দেখা নেই পর্যটকের, লোকসান গুনছেন ব্যবসায়ীরা
হোটেল গ্র্যান্ড ভ্যালির ব্যবস্থাপক ইসমাইল সুমন বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে পর্যটক না আসায় আমাদের হোটেল খালি যাচ্ছে। তাই ভেবেছিলাম ঈদের টানা ছুটিতে বুকিং পাবো, পর্যটক আসবে সে উপলক্ষে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড়ও ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও কোন বুকিং নেই পর্যটক না আসায় হোটেলও খালি। এ অবস্থা চলতে থাকলে স্টাফদের খরচ চালাতেও কষ্ট হয়ে যাবে।
ফানুস রিসোর্টের পরিচালক ইমরান উদ্দিন বলেন, পাহাড়ের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য দীর্ঘ দিন ধরে বান্দরবানে পর্যটকের আগমন ঘটছে না। ভেবেছিলাম ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটক আসবে সে হিসেবে ছাড়ও দিয়েছি। কিন্তু কোন বুকিং পাচ্ছি না রুমও খালি। স্টাফদের বেতন মেইনটেনেন্স খরচ-সব মিলিয়ে আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। শুধু হোটেল ব্যবসায়ীরাই নয়, পর্যটক না আসায় বিপাকে পড়েছে পরিবহন শ্রমিক, টুরিস্ট গাইড, রেস্টুরেন্ট মালিকসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট কয়েক হাজার শ্রমিক।
পাহাড়ের চলমান অস্থিতিশীল পরিবেশ এবং তিন উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকায় পর্যটক আসছে না বলে জানান, হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটক বরণে বিভিন্ন প্রস্তুতি নিয়েছে বান্দরবানের পর্যটন সংশ্লিষ্টরা, পর্যটকদের আকর্ষণে দেয়া হয়েছে নানা রকম ছাড়ের অফার। তবে জেলার তিনটি উপজেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকায় ঈদুল আজহার এই বন্ধে বান্দরবানে পর্যটকদের অগ্রিম বুকিং নেই বেশিরভাগ হোটেল মোটেল রিসোর্টে। এতে হতাশ জেলার পর্যটন ব্যবসায়ীরা। এর ফলে পর্যটন খাতে দৈনিক কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে ইউপিডিএফ ও কেএনএফের মধ্যে গোলাগুলি
তবে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় পুলিশের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ।
বান্দরবান পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, বান্দরবানের তিনটি উপজেলায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও চারটি উপজেলায় পর্যটকরা ভ্রমণ করতে পারবে। তারা যাতে নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারে সেজন্য সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি পর্যটন স্পটে থাকবে টুরিস্ট পুলিশ সাদা পোশাকধারী পুলিশসহ নিয়মিত টহল দল। পর্যটকরা এখানে নিরাপদে ঘুরে বেড়াতে পারবে।
উল্লেখ্য, পাহাড়ে জঙ্গি বিরোধী অভিযানের কারণে ২০২২ সালের অক্টোবর মাস থেকে জেলার রুমা রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রশাসন। এরপর থেকে থমকে যায় জেলার পর্যটন শিল্প।
from somoynews.tv | RSS Feed https://ift.tt/PGKgSaD
via IFTTT
Comments
Post a Comment